যে মানুষকে পৃথিবীতে খলিফা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল সেই মানুষের অপকর্মে বিশ্ব আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। ফেরেশতারা যে আশংকার কথা বলেছিলেন, সেই রক্তপাতে ফেৎনা ফ্যাসাদে পৃথিবী আজ চরম অবস্থায়। তবুও, মানুষ হিসেবে আমাদের অনেক অভিমান। জাতি হিসেবে আমরাই নাকি সৃষ্টির সেরা, আশরাফুল মখলুকাত!
অথচ কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে মানুষের তীব্র সমালোচনাই করা হয়েছে। বিপদে পড়লেই মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে, বিপদ কাটলেই ভুলে যায়, শিরক করে ((১০:১২) মানুষ অতিমাত্রায় জালিম, অকৃতজ্ঞ (১৪:৩৪, ১৭:৬৭,১৭:৮৩, ২২:৬৬, ৪২:৪৮, ১০০:৬), মানুষ খুব ত্বরাপ্রবণ (১৭:১১), মানুষ খুবই কৃপণ (১৭:১০০), মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় (১৯:৫৪), মানুষ পাপপ্রবণ (৭৫:৫), সীমালংঘনকারী (৯৬:৬), ক্ষতিগ্রস্ত (১০৩:২)
যখনই মানুষের (ইসনাস) প্রসঙ্গ এসেছে প্রায় সকল ক্ষেত্রে তার সমালোচনা করা হয়েছে কোরআনে। এহেন মানুষ কী করে সৃষ্টির সেরা হয় সে প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে।
বিভিন্ন ওয়াজ নসিহতে মানুষকে আশরাফুল মখলুকাত বলে সৃষ্টির সর্বোচ্চ আসনে বসালেও কোরআনের আয়াতে আল্লাহ অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন-
১৭:৭০ আমি তো আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করিয়াছি; স্থলে ও সমুদ্রে উহাদের চলাচলের বাহন দিয়াছি; উহাদেরকে উত্তম রিযিক দান করিয়াছি এবং আমি যাহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি তাহাদের অনেকের উপর উহাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি।
আয়াতে খুব পরিস্কার করে বলা হয়েছে, সৃষ্টির অনেকের উপরে মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। সবার উপরে নয়।
অর্থাৎ মানুষ জাতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি নয়। তবে আমলের সুবাদে যে কেউ ওই শ্রেষ্ঠত্বের আসন পেতে পারেন।
৯৮:৭ নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ।