ধর্মনিন্দার জন্য ফতোয়া দিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি বিনা ফতোয়ায় হত্যার বা হত্যার জন্য আক্রমণের নজির বিস্তর। সালমান রুশদির স্যাটানিক ভার্সেস নিয়ে যে সহিংসতার সূত্রপাত ঘটেছিল কয়েক দশক আগে তার জের এখনো চলছে। কোরআন পোড়ানোর জন্য পাস্তর টেরি জোন্সের উদ্যোগ বা নবীকে নিয়ে কার্টুন আকার ঘটনায় তীব্র জনরোষ সম্পর্কে সকলেই অবগত। পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনের বিরুদ্ধে কথা বলে নিহত সালমান তাসীরের ঘটনাও কমবেশি অনেকেই জানেন।
অথচ কোরআন কিন্তু কখনোই আল্লাহ বা রাসুলের নিন্দা তথা ধর্মনিন্দার জন্য কাউকে হত্যার নির্দেশ দেয়নি।
কোরআনে একাধিকবার বলা হয়েছে যে তত্কালীন আরবরা নবীকে নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করেছে, ব্যঙ্গ করেছে (৩৭:১২)। অতীতের রাসুলদের নিয়েও এভাবে উপহাস করা হয়েছে (১৩:৩২, ১৫:১১, ২১:৪১)। নবীজীকে (সাঃ) মিথ্যাবাদী, জালিয়াত ইত্যাদি বিভিন্ন অপবাদ দেওয়া হয়েছে (১৬:১০১, ২৫:৪)। তাকে বলা হয়েছে জাদুগ্রস্ত (১৭:৪৭, ২৫:৮), উন্মাদ কবি (৩৭:৩৬)। তার প্রচারিত কোরআনের বাণীকে অলীক কল্পনা (২১:৫), অন্যের কাছে শিখে বলা (১৬:১০৩), মনগড়া উক্তি (৩৮:৭) অতীতের উপকথা (২৫:৫) ইত্যাদি বহু কিছু বলা হয়েছে। এসবের প্রতিক্রিয়ায় কোরআনে কখনই কোনরকম শাস্তির কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে, কিয়ামাতের দিনে তাদেরকে প্রতিদান দেওয়া হবে।
তবে এসবের চেয়েও ভয়ংকর নিশ্চয়ই স্বয়ং আল্লাহর নামে অপবাদ আরোপ করা, আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা বলা এবং তাঁর আয়াতসমূহ মিথ্যা সাব্যস্ত করা। এ প্রেক্ষিতেও জানানো হয়েছে যে, মিথ্যা সাব্যস্তকারীদেরকে কিয়ামাত দিবসে তাদের প্রতিফল পূর্ণ করে দেয়া হবে। আল্লাহর আয়াত ও রসূলকে উপহাস করার ফলে তাদেরকে জাহান্নামে যেতে হবে। তবে এ কারণে তাদেরকে মেরে ফেলতে বা শাস্তি দিতে বলা হয় নি।
এ সব আয়াতের মাধ্যমে মূলত রসূল ও মু’মিনদের মধ্যে ধৈর্যধারণের মনোভাব তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে রসূলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, যেন তিনি তাদেরকে বলে দেন যে, আমার জন্য আমার কর্ম এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। আমার কর্মের বিষয়ে তোমরা দায়মুক্ত এবং তোমাদের কর্মের বিষয়ে আমি দায়মুক্ত।
পৃথিবীতে তাদেরকে উপহাস ও সমালোচনাকালে এড়িয়ে চলতে হবে কিন্তু অন্য সময় সাধারণ সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে নিষেধাজ্ঞা নেই। আল্লাহর আয়াতের সমালোচনা ও রাসুলের বিরুদ্ধে কটুক্তি বা দ্বীন-ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করার জবাব বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে প্রদান করতে হবে, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়। তাদের বিভ্রান্তিকর যুক্তিকে উত্তম যুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে আর যখন তারা নিছক সমালোচনার জন্য সমালোচনায় প্রবৃত্ত হয় তখন তাদেরকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করতে হবে। কুরআনে জাহিল বা মুর্খদেরকে সালাম জানিয়ে এড়িয়ে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এটাই নিজেরাও জাহেলদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে এবং সময়ের অপচয় থেকে বেঁচে থাকার উত্তম উপায়।
৭:১৮০ আল্লাহর জন্য রহিয়াছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁহাকে সেই সকল নামেই ডাকিবে; যাহারা তাঁহার নাম বিকৃত করে (আরবী ইউলহিদুনা) তাহাদিগকে বর্জন করিবে; তাহাদের কৃতকর্মের ফল তাহাদিগকে দেওয়া হইবে।
[আরবী ইউল’হিদুনা অর্থ নিন্দা করা, বিচ্যুত করা, লঙ্ঘন করা, বিকৃত করা ইত্যাদি।]
৪:১৪০ :: আর তিনি কিতাবের মধ্যে তোমাদের জন্য নাযিল করেছেন যে, যখন তোমরা শুনবে যে আল্লাহর আয়াতের প্রতি কুফর করা হচ্ছে এবং তার প্রতি উপহাস করা হচ্ছে, তাহলে তাদের সাথে বসবে না যতক্ষণ না তারা তা ভিন্ন অন্য বিষয়ের আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়, অন্যথায় তোমরা নিশ্চয় তখন তাদের মতো হয়ে যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে ও মুনাফিকদেরকে একত্রিতভাবে জাহান্নামে একত্র করবেন।
৬:৬৮-৬৯ :: যখন তুমি তাদেরকে দেখবে যারা আমাদের আয়াতসমূহের বিষয়ে নিছক সমালোচনা করে, তখন তুমি তাদেরকে উপেক্ষা করে চলো, যতক্ষণ না তারা তা ভিন্ন অন্য বিষয়ের আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়, আর যদি শয়তান তোমাকে ভুলিয়ে দেয়, তাহলে স্মরণ হওয়ার পর জালিম কওমের সাথে বসো না। আর যারা স্রষ্টা-সচেতনতা অবলম্বন করে তাদের উপর তাদের (আল্লাহর আয়াতের সমালোচনাকারীদের) কোনোরূপ হিসাব দেয়ার দায়িত্ব বর্তাবে না, কিন্তু তাদেরকে উপদেশ দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে যেন তারা স্রষ্টা-সচেতন হতে পারে।
মুশরিকরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে আহবান করে তাদেরকেও গালি দেয়া যাবে না। কারণ তাহলে তারা শত্রুতা ও অজ্ঞতাবশত আল্লাহকেই গালি দিবে।
৬:১০৬-১০৮ :: এবং তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না, তাহলে তারা শত্রুতা ও অজ্ঞতাসহকারে আল্লাহকে গালি দিবে। …
আল কুরআনে আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও রসূলদের প্রতি বা দ্বীন-ইসলামের বিষয়ে মিথ্যারোপ, কটুক্তি ও অপপ্রচারের মোকাবেলায় রসূল ও মু’মিনদের করণীয় হিসেবে যে পথনির্দেশ দেয়া হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত সার হলো, আল্লাহর প্রশংসা ও পবিত্রতা জ্ঞাপন, সবর, মন্দের জবাব ভালো দিয়ে দেয়া, মিথ্যার বিপরীতে সত্য তথ্য ও তার স্পষ্ট যুক্তিপ্রমাণ উপস্থাপন এবং জাহালত প্রদর্শনকারীদেরকে সৌজন্যের সাথে উপেক্ষা করা।
১০:৪১ :: আর যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তবে বলো, আমার জন্য আমার কর্ম এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম। আমি যা কর্ম করি সেই বিষয়ে তোমরা দায়মুক্ত এবং তোমরা যা কর্ম করো সেই বিষয়ে আমি দায়মুক্ত।
১৫:৯৭-৯৮ :: আর নিশ্চয় আমরা জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয়। সুতরাং তুমি তোমার প্রভুর পবিত্রতা-মহিমা ব্যক্ত করো এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
১৬:১২৭ :: এবং তুমি সবর করো। এবং তোমার সবর আল্লাহর সাহায্যক্রমেই। তাদের কার্যক্রমের উপর তুমি দুঃখিত হয়ো না। এবং তারা যেসব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে সে বিষয়ে তুমি সংকীর্ণমনা হয়ো না।
২০:১৩০ সুতরাং উহারা যাহা বলে, সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, এবং রাত্রিকালে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, এবং দিবসের প্রান্তসমূহেও যাহাতে তুমি সন্তুষ্ট হইতে পার।
২৩:৯৬ :: মন্দকে প্রতিহত করো ভালো আচরণের মাধ্যমে। তারা যা বর্ণনা (বা কটুক্তি) করে আমরা তা জানি।
৩৮:১৭ ইহারা যাহা বলে তাহাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং স্মরণ কর, আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদের কথা; সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমূখী।
৪১:৩৪ আর ভালো ও মন্দ সমান নয়। (মন্দকে) প্রতিহত করো ভালো আচরণের মাধ্যমে। ফলে তখন তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যায় অন্তরঙ্গ বন্ধু।
৫০:৩৯ :: তারা যা বলে সে বিষয়ে তুমি সবর করো। আর তোমার প্রভুর প্রশংসাসহ পবিত্রতা জ্ঞাপন করো, সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে।
৭৩:১০ :: এবং তারা যা বলে সেই বিষয়ে তুমি সবর করো। এবং সুন্দরভাবে (সৌজন্য ও ভদ্রতার সাথে) তাদেরকে পরিহার করো।
কেবলমাত্র যারা শান্তিচুক্তি লংঘন করে ও দ্বীন-ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে তাদেরকে শান্তি বিনষ্ট করা থেকে বিরত রাখার জন্য যুদ্ধ করার নির্দেশনা রয়েছে। শুধুমাত্র দ্বীন-ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তির কারণে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার অনুমোদন দেয়া হয়নি। বরং যে আয়াতটিতে দ্বীন-ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তি ও যুদ্ধের প্রসঙ্গ একসাথে এসেছে (৯:১২) তার পরবর্তী আয়াতটিতেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, ঐ কটুুক্তিকারীরাই প্রথমে মু’মিনদের উপর আক্রমণ করেছিলো। এছাড়া চুক্তিভঙ্গকারী ও কটুক্তিকারী কাফিরদের প্রধানদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা থেকে বুঝা যায় যে, যুদ্ধ হবে মূলত ঐ প্রধানদেরকে ধরাশায়ী করা এবং প্রয়োজনে হত্যা করার জন্য, কিন্তু চুক্তিভঙ্গকারী ও কটুক্তিকারী সর্বসাধারণকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য নয়।
৯:১২-১৩ :: আর যদি তারা (মুশরিকরা) চুক্তি করার পর তাদের শপথ (চুক্তির ধারা বা শর্ত) ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীন-ধর্মের প্রতি কটুক্তি করে, তাহলে কাফিরদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। নিশ্চয় তাদের জন্য কোনো শপথ (চুক্তির মেয়াদ পূরণের শর্ত পালন) থাকতে পারে না, যাতে তারা (শান্তি বিনষ্ট করা থেকে) নির্লিপ্ত হয়। তোমরা কি সেই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না যারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং রসূলকে বের করে দেয়ার সংকল্প করেছিল এবং তারাই প্রথমে আক্রমণ করেছিল? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করো? অথচ আল্লাহ অধিক হক্বদার যে, তোমরা তাঁকেই ভয় করবে, যদি তোমরা মু’মিন হও।
উল্লেখ্য, কোরআনের আলোকে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কেবলমাত্র দুটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য (৫:৩৩)।
১. দেশে নৈরাজ্য তৈরির শাস্তি হিসেবে। যদি কেউ মাত্রাতিরিক্ত অপকর্ম, দুর্নীতি, অন্যায়ের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের ক্ষতি করেন তাহলে রাষ্ট্র তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে।
২. খুনের শাস্তি হিসেবে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে রাষ্ট্র।
এখানে স্মরণযোগ্য যে, ফ্যাসাদ বা বিশৃঙ্খলা বলতে লাগাতার সেই সব অপকর্মকেই গণ্য করতে হবে যার কুপ্রভাব সমাজের গভীর ক্ষতির কারণ হয়, সমাজকে অসুস্থ করে তোলে। এক্ষেত্রে অপরাধীকে অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে, জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে রাষ্ট্রের উদ্যোগে কিংবা যারা শাসনব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত তাদের মাধ্যমে। তারা অপরাধের ধরণ ও অন্যান্য অনেক বিষয় বিচার করবেন যা হয়তো সবসময় মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করবে। নিচের আয়াতটি লক্ষ্য করুন :
৫:৩৩-৩৪ যাহারা আল্লাহ ও তাঁহার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক (আরবী আরদি ফাসাদান) কার্য করিয়া বেড়ায় ইহাই তাহাদের শাস্তি যে, তাহাদিগকে হত্যা করা হইবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করা হইবে অথবা বিপরীত দিক হইতে তাহাদের হাত ও পা কাটিয়া ফেলা হইবে অথবা তাহাদিগকে দেশ হইতে নির্বাসিত করা হইবে। দুনিয়ায় ইহাই তাহাদের লাঞ্ছনা ও পরকালে তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে, তবে, তোমাদের আয়ত্তাধীনে আসিবার পূর্বে যাহারা তওবা করিবে তাহাদের জন্য নহে। সুতরাং জানিয়া রাখ যে, আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
এখানে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কেউ যদি আটক হওয়ার আগেই নিজে থেকে অনুতপ্ত হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে এই চরম দণ্ড প্রযোজ্য নয়।
তবে ক্রমাগত মানহানি এবং ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোর ঘটনায় যদি দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় তখন রাষ্ট্র এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে এটা সাধারণ ধর্মনিন্দার চেয়ে ভিন্ন বিষয়। আজকাল নবী (সাঃ) এর নামে যে কোন কটুক্তিতেই মুসলিম সমাজ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করাকে স্বাভাবিক বলে মনে করে। অনেক আলেম এক্ষেত্রে হিংসাকে উসকে দেন কোরআনের আয়াতের ভুল উপস্থাপনার মাধ্যমে।
যেমন পাকিস্তানের এক আলেম সুরা আহযাবের আয়াত ভুল ও অন্যায়ভাবে উপস্থাপন করে সহিংসতাকে চারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। লিংক : https://www.youtube.com/watch?v=B_a_aYeFbDE&t=1s
এভাবে ভুল আয়াত, আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা এবং মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর হাদিস বর্ণনার মাধ্যমে মুসলিম মানসে সহিংসতার বীজ বপন করার চেষ্টা অহরহই লক্ষ্য করা যায়।